Sampurna Chakraborty | ২৪ জুন ২০২৫ ২২ : ৫৫Sampurna Chakraborty

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের পাঁচ শতরান বিফলে। লিডস টেস্ট জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ১-০ তে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। ৩৭১ রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় বেন স্টোকসরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। এজবাস্টনে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়। এক টেস্টে ভারতীয় ব্যাটারদের পাঁচ শতরানের পরও হার। সচরাচর যা দেখা যায় না। জঘন্য ফিল্ডিং এবং ভারতীয় বোলারদের ব্যর্থতায় পঞ্চম দিন পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করতে সক্ষম হয় ব্রিটিশরা।‌ জয়ের কারিগর বেন ডাকেট। ১৭০ বলে ১৪৯ রানের জয়সূচক ইনিংস খেলেন। ইনিংসে ছিল ১টি ছয়, ২১টি চার। জ্যাক ক্রলিকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম উইকেটে ১৮৮ রান যোগ করেন। পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ এবং শার্দূল ঠাকুর জোড়া উইকেট তুলে নিলেও শেষরক্ষা হল না। ডাকেট আউট হওয়ার পর বাকি কাজটা সারেন জো রুট। ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন জেমি স্মিথ। শেষদিকে ইংল্যান্ডকে দ্রুত জয়ে পৌঁছে দেন তিনি। ৪৪ রানে অপরাজিত ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার ব্যাটার। একাধিক ক্যাচ মিস এবং অল্প রানের মধ্যে একাধিক উইকেট হারানো পার্থক্য গড়ে দেয়। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭২ রানে ১৩ উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে ব্যাট করছিলেন রাহুল এবং পন্থ, অন্তত সাড়ে চারশো রান করা উচিত ছিল। প্রথম ইনিংসেও অন্তত সাড়ে পাঁচশোর কাছাকাছি পৌঁছনো উচিত ছিল টিম ইন্ডিয়ার। 

টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান বেন স্টোকস। কিন্তু বুমেরাং হয়ে ফেরে। ভারতের প্রথম ইনিংসে শতরানের হ্যাটট্রিক। সেঞ্চুরি করেন যশস্বী জয়েসওয়াল (১০১), শুভমন গিল (১৪৭) এবং ঋষভ পন্থ (১৩৪)। শুরুটা করেন তরুণ বাঁ হাতি। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্টে শতরান করে রেকর্ডবুকে সামিল হন গিল। আইপিএলের ব্যর্থতা কাটিয়ে রানে ফেরেন ঋষভ পন্থও। তিনজন ছাড়া ৪২ রান করেন কেএল রাহুল। গিল এবং পন্থ ব্যাট করার সময় মনে হয়েছিল, অনায়াসেই সাড়ে পাঁচশো রান পেরিয়ে যাবে ভারত। কিন্তু লোয়ার মিডল অর্ডার পুরো ব্যর্থ। ৪৭১ রানে শেষ হয়ে যায় ভারতের প্রথম ইনিংস। চারটে করে উইকেট নেন জস টাং এবং বেন স্টোকস।

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪৬৫ রানে শেষ হয় ইংল্যান্ডের ইনিংস। প্রথম ইনিংসের শেষে মাত্র ৬ রানে এগিয়ে ছিল টিম ইন্ডিয়া। শতরান করেন অলি পোপ (১০৬)। মাত্র এক রানের জন্য একশো হাতছাড়া হয় হ্যারি ব্রুকের। ৯৯ রানে আউট হন। ৬২ করেন বেন ডাকেট। ভারতের মতো ইনিংসে তিনটে শতরান না হলেও, গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করে ইংল্যান্ডের লোয়ার মিডল অর্ডার। তবে মুড়িমুড়কির মতো ক্যাচ মিস না হলে, আরও আগে শেষ হয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ডের ইনিংস। পাঁচ উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা। তিন উইকেট প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের। 

দ্বিতীয় ইনিংসে কেএল রাহুল এবং ঋষভ পন্থের ব্যাটে ভর করে সাড়ে তিনশো রানের গণ্ডি পেরোয় টিম ইন্ডিয়া। বাকিরা ডাহা ব্যর্থ। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ান যশস্বী জয়েসওয়াল (৪) এবং শুভমন গিল (৮) রান পায়নি। চতুর্থ উইকেটে ১৯৫ রান যোগ করে রাহুল-পন্থ জুটি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারতীয় দল। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩৭১ রান। চতুর্থ দিনের শেষে বিনা উইকেট হারিয়ে ২০ রান ছিল ইংল্যান্ডের। লক্ষ্যমাত্রা দেখে মনে হয়েছিল, লিডস টেস্ট জিতবে ভারত। বিশেষ করে যখন ভারতীয় দলে বুমরার মতো বোলার আছে। কিন্তু জঘন্য ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হল। এবারও ক্যাচ মিসের বহর। ডাকেট ৯৭ রানে ব্যাট করার সময় ক্যাচ ফেলেন যশস্বী। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেও, দ্বিতীয় ইনিংস উইকেটহীন বুমরা‌‌।‌ প্রথম ইনিংসে ৬২ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ জেতানো ১৪৯ রানে স্বভাবতই ম্যাচের সেরা ডাকেট।